পুতিন চাইলেই চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি ঘটবে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে মস্কোর ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করেছে ইউক্রেন। এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। যদিও ইউক্রেনীয়দের মতে, যুদ্ধবিরতিতে সহজে রাজি হবে না রাশিয়া।
দীর্ঘ তিন বছর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপন করা ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। যদিও বৈঠকে রুশ কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আকাশ ও নৌপথে হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনা করবে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
প্রস্তাবটি এখন পাঠানো হবে রাশিয়ার কাছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিজেই প্রস্তাবটি নিয়ে যাবেন পুতিনে কাছে। এ সময় তিনি বলেন, বল এখন রাশিয়ার কোর্টে। এই প্রস্তাবে রাজি হওয়া মানে শান্তির পথে আসা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইউক্রেন গ্রহণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতিতে প্রবেশ করা এবং সংঘাত অবসানে অবিলম্বে আলোচনায় অংশ নেয়ার পথ খুলেছে। যা স্থায়ী এবং টেকসই সমাধান নিয়ে আসবে। দুই দেশেরই স্বার্থ ও নিরাপত্তা রক্ষা হবে। পাশাপাশি বিবেচনায় আসবে সমৃদ্ধির বিষয়টিও।'
ইউক্রেন বলছে যুদ্ধবিরতির সফলতা নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর। প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। আর ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রস্তাবটিকে ইতিবাচক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও বোমা হামলা বন্ধ করা ছাড়াও, কৃষ্ণ সাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সম্মুখযুদ্ধ বন্ধে যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রস্তাবটি ইউক্রেনের কাছে ইতিবাচক। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতেও প্রস্তুত।'
এদিকে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবে সম্মত হবে না রাশিয়া। তাদের আশঙ্কা উল্টো আরও কিছু শর্ত জুড়ে দিতে পারে মস্কো।
স্থানীয় একজন বলেন, 'রাশিয়া যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত নয়। বৈঠক চলাকালীনও তারা ইউক্রেনে ক্রমাগত হামলা চালিয়েছে।'
ইউক্রেনের একজন বলেন, 'যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়ানরা মেনে নেবে না। তারা একদিকে শান্তির কথা বলে, অন্যদিকে হামলা চালায়।'
স্থানীয় একজন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদিও শুরু থেকেই এই পদক্ষেপ নিত, তাহলে যুদ্ধ এতদূর পর্যন্ত গড়ায় না। ইউক্রেনকে কোনো অঞ্চলও হারাতে হতো না।'
এদিকে ইউক্রেনের জন্য পুনরায় সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য দেয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইচ্ছুক ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, জেলেনস্কির জন্য হোয়াইট হাউজের দরজা সবসময় খোলা।